Posts Tagged ‘Relay’

npn-transistor-2n3055-and-symbole

সার্কিট সিম্বল, কি ও কেনঃ

ইলেকট্রনিক্স সার্কিট ডায়াগ্রামে/স্কেমেটিকে সিম্বল (Symbol-চিহ্ন) খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। বাস্তবে পার্টস গুলো দেখতে যেমন হয় তার চেয়ে সার্কিটে এই সিম্বল গুলো একদমই আলাদা। একজন নতুন হবিস্ট কে অবশ্যই গুলোর সাথে পর্যাপ্ত পরিচয় থাকা উচিত ইলেকট্রনিক্স নিয়ে কাজ করতে গেলে আর এখন এই টপিকেই ছোট্ট আলোচনা করব।

পার্টস এর বাস্তব রূপ ও সিম্বলঃ

সার্কিটে বহুল প্রচলিত কিছু পার্টস হলো রেজিস্টার, ক্যাপাসিটর, ট্রানজিস্টার, ডায়োড, এলইডি ইত্যাদি। এছাড়াও আছে সুইচ, ব্যাটারি বা বিভিন্ন রকম পাওয়ার সোরস, ট্রান্সফরমার, আইসি, ফিউজ, সেন্সর, লজিক গেট ইত্যাদি। কিন্তু বাস্তবে এ গুলো যেমন দেখতে হয় সার্কিট স্কিমেটিকে কিন্তু দেখতে তেমন নয়। তাহলে এই ভিন্নতা কেন?

ধরুন আপনি একটা ট্রানজিস্টার নিয়ে কাজ করছেন যেটা NPN type (উদাহরণঃ BC547, C828, D400, D882, D880, BD135/139 ইত্যাদি) এখন যদি প্রতি ট্রানজিস্টার কে এমন আলাদা আলাদা করে সিম্বল/চিহ্ন দিয়ে প্রকাশ না করে বাস্তব ভাবে দেখানো হয় তারফলে স্কিমেটিক যেমন বিশাল বড় আর জটিলতা পূর্ণ হবে তেমনি বুঝতেও অনেক অসুবিধা হবে। একই কথা রেজিস্টর, ক্যাপাসিটর বা অন্যান্য পার্টস এর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। মানের ভিন্নতানুসারে আকার ও পাল্টায়।
নিচের চিত্রে বিভিন্ন ট্রানজিস্টার এর সত্যিকার রূপ আর তার স্কিমেটিক সিম্বল দেখতে পাবেন-

npn-transistor-2n3055-and-symbole-300x131

NPN transistor (2n3055) এর বাস্তব রূপ ও সিম্বল

PNP transistor (BD136) এর বাস্তব রূপ ও সিম্বল

PNP transistor (BD136) এর বাস্তব রূপ ও সিম্বল

একই কথা রেজিস্টরের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। মানের ভিন্নতা অনুযায়ী আকার পাল্টায় কিন্তু চিহ্ন একই থাকে। নিচের চিত্রটি দেখুন-

resistor-sample-300x224

resistor-symbol-american

তাই স্কিমেটিকে এগুলোকে সিম্বল/চিহ্ন দিয়ে প্রকাশ করা হয়। সহজ ভাবে বললে সার্কিট এ ব্যবহার করা পার্টস এর কাল্পনিক রূপ হচ্ছে এটি। এ দিয়ে প্রকাশকরে সার্কিট ডায়াগ্রাম কে সহজবোধ্য করা হয়।
তাহলে নিশয়ই বুঝতে পারছেন ল গুরুত্ব কত!

কিছু কমন সিম্বল

সচরচার যে পার্টসগুলো লাগে, তারমধ্যে অন্যতম হচ্ছে রেজিস্টর, ট্রানজিস্টার, ক্যাপাসিটর, এলইডি প্রভৃতি।

এলইডি - বাস্তব চিত্র ও সিম্বল

Polarized ও Non-Polarized ক্যাপাসিটর ও সিম্বল

কিছু পার্টস আছে, যেগুলো বাস্তবে দেখতে একই রকম, কিন্তু চিহ্ন আলাদা। যেমন NPN ও PNP ট্রানজিস্টর

NPN ও PNP ট্রানজিস্টারের বাস্তব রূপ ও সিম্বল

কিছু সিম্বল ও তার উৎস, কারা এ গুলো নিয়ন্ত্রণ করে খুব পপুলার কিছু নিচের উইকিপেডিয়া লিঙ্কে পাবেন-
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Electronic_symbol

ইত্যাদি ভিন্ন ভিন্ন পার্টস এর জন্য ভিন্ন ভিন্ন সিম্বলই আছে যা উদাহরণ দিয়ে শেষ করা যাবে না। আর নিত্য নতুন বিভিন্ন পার্টস, সেনসর ইত্যাদি আবিষ্কার হচ্ছে আর তার লিস্ট ও ক্রমান্বয়ে বড় হচ্ছে। তবে মোটামুটি কাজ চলার মতো করে একটা বিশাল তালিকা দিচ্ছি চিত্রে। দেখলেই বুঝতে পারবেন সিম্বলের কত রকম বাহারি সমাহার রয়েছে ইলেক্ট্রনিক্স দুনিয়ায়।

Electronics-Circuit-Symbols

নিম্নে কিছু খুব কমন ও জনপ্রিয় ট্রানজিস্টার এর লেগ কনফিগারেশন দেয়া হলো।

transistor package pinout 2

transistor package pinout 3

transistor package pinout 4

transistor package pinout 1

টিপসঃ

এখন কার চাইনিজ দুই নাম্বার ভেজাল পার্টস এর যন্ত্রণায় ডাটা শিট বা গুগলে ইমেজ দিয়ে লেগ না খুঁজে মিটার দিয়ে মেপে বের করাই উত্তম পন্থা।

PIR-Detection

অনেকেই দেখেছেন (বিশেষত ইউরোপ আমেরিকায়) যে বাড়ির সিড়িকোঠায়/গ্যারেজে বা কম্পাউন্ডে অটো কিছু সুইচ আছে যা মানুষের উপস্থিতি টের পেয়ে জ্বলে উঠে। কিংবা দোকান বা বাসাবাড়িতে কেউ প্রবেশ করলে এলার্ম সাউন্ড হয়। আজকাল অনেক প্রক্রিয়া এটি সম্ভব। যেমন সি সি ক্যামেরা, এমনকি এন্ড্রয়েড বেসড ফ্রি এপ আছে যে গুলা এই কাজ করে দিতে পারে। সিসি ক্যামেরা বা এন্ড্রয়েড এপে ক্যামেরা বা মাইক্রোফোনের ইনপুট প্রসেসিং করে সফটওয়্যার দিয়ে এই কাজটি করা হয়। কিন্তু এগুলার কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। যেমনঃ ক্যামেরা অন্ধকারে কাজ করেনা (সি সি ক্যামেরায় আই আর অবশ্য অন্ধকারেও দেখে, কিন্তু আই আর এর আলো দেখে ক্যামেরা সনাক্ত করা যায় যা সিকিউরিটির ক্ষেত্রে বিপদজনক)। কিংবা লো সাউন্ডও অনেকসময় ডিটেক্ট হয়না (হাই পাওয়ার দিয়ে করা যায়)। কিন্তু আমরা হার্ডওয়্যার বেসড একটি ডিটেক্টর বানাব যা খুবই কম খরচ, সফটওয়্যার ছাড়াই কাজ করে এবং সাধারন ভাবে ডিটেক্টকরা যায়না।

আমাদের এই সার্কিটের মূলে রয়েছে পির (PIR= Passive Infrared Sensor) সেন্সর। আমরা বিজ্ঞান থেকে জানি (বিকির্ণ) তাপ আর আলো একই শক্তি। শুধু ফ্রিকোয়েন্সি ভিন্ন। আমাদের চোখ উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সি ডিটেক্ট করে যাকে আমরা বলে আলো। আর ত্বক লো ফ্রিকোয়েন্সি ডিটেক্ট করে যাকে আমরা বলি তাপ। যখন কোন একটা বস্তু সামান্যও গরম হয় তা থেকে তাপ/আলো বিকরিত হয়। কোন কোন বিকিরন এত কম যে আমাদের ত্বক তা ডিটেক্ট করেনা। কিন্তু ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র দিয়ে তা ঠিকই বের করা সম্ভব। যেমন জীবিত প্রানির দেহের উত্তাপও বিকিরিত হয়। সাধারন ভাবে আমরা তা বুঝিনা (একত্রে অনেক লোক ঠাসাঠাসি করে থাকলে টের পাওয়া যায়)। এই সামান্য বিকির্ণ তাপ লাইট স্পেকট্রামের (বর্নালী সারনী) লাল আলোর নীচের সারনিতে ফেলা হয় তাই একে Infra (নীচ) Red (লাল), বা সংক্ষেপে IR বা অবলোহিত আলো বলে। পির সেন্সর এই আই আর ডিটেক্ট করে।pir-moduleকিন্তু PIR বা পির প্যাসিভ (নিস্ক্রিয়) সেন্সর, এক্টিভ (সক্রিয়) সেন্সর নয়। সে আই আর এর মাত্রা নির্ধারন করেনা সে শুধু আই আর এর তারতম্য নির্ধারন করতে পারে (যেমন আমাদের ত্বক কত ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তা বলতে পারেনা, কিন্তু কিন্তু দুইটি বস্তুর মধ্যে কোনটিতে তাপ কম/বেশী তা বলতে পারে)।

পির সেন্সর ফ্রেম বাই ফ্রেম আই আরে এর তুলনা করে। যেমন প্রথম ফ্রেম ১ম সেকেন্ডে ২য় ফ্রেম ২য় সেকেন্ডে। কিংবা ১ম ফ্রেম ১ম সেকেন্ড ২য় ফ্রেম ৫ম সেকেন্ড ইত্যাদি। ফ্রেম টু ফ্রেম আই আর মাত্রার ভিন্নতা দেখা দিলে সে একটা সিগনাল তৈরী করে, অন্যথায় কোন সিগনাল জেনারেট হয় না। চিত্রে একটা পির সেন্সর মডিউল দেখানো হয়েছে। একটাতে গ্রাউন্ড (সাপ্লাই [-]) আরেকটায় Vcc (সাপ্লাই [+])। মাঝের পিনটা সিগনাল পিন (হাই= ৩.৩ ভোল্ট, লো = ০ ভোল্ট)। সেন্সরটিতে দুইটা পট (POTential control) আছে যা ঘুরিয়ে একে ফাইন টিউন করা যায়।

pir_iso_botm_annot

Sx: সেন্সিটিভিটি কন্ট্রোল। এটি ঘুরিয়ে পির সেন্সরের সংবেদনশীলতা কম বেশী করা যায় (কত ঘন ঘন ফ্রেমের তুলনা করবে ০.০০ থেকে ১০ সেকেন্ড)। বেশী সেন্সিটিভিটি মানে অল্প মুভমেন্টেই সিগনাল জেনারেট হবে।

Tx: এটি টাইমার কন্ট্রোল। মানে একবার সিগনাল জেনারেট হলে সিগনাল পিন কতক্ষন হাই থাকবে (৫ থেকে ৩০০ সেকেন্ড)।। বেশী করা মানে সিগনাল পিন বেশীক্ষন হাই থাকবে।

এছাড়া অনেক কম্পানির পির সেন্সরে একটি জাম্পার সেটিং থাকে।

H: রিপিট ট্রিগারঃ এই সেটিং মুভমেন্ট চলতে থাকলে ট্রিগারিং বার বার হতে থাকে ফলে হাই অবস্থা প্রলম্বিত হয়।

L: সিংগেল ট্রিগারঃ এই সেটিং মুভমেন্ট চলতে থাকলেও ট্রিগারিং এক বারি হয় ফলে হাই অবস্থা কেবল Tx টাইম পর্যন্তই হয়।

পির সেন্সরের (মূল সেন্সরটি যেটি পাইরোইলেক্ট্রিক সেন্সর তা ছোট স্কয়ার জানালা যুক্ত তিন পায়া মেটাল কেসিং-এ দৃষ্টির আড়ালে থাকে) উপর সাদা একটা লেন্স বসানো থাকে যেটি বিভিন্ন এঙ্গেলের আই আর সংগ্রহ করে ভিতরে থাকা সেন্সরে পাঠায়। সাধারনত এর এঙ্গেল ১১০ ডিগ্রি হয়। (দামী গুলায় আরো বেশী হয়।) আর কম দামী গুলায় সেন্সিং ডিষ্টেন্স/দুরত্ব ১০ মিটার (সর্বোচ্চ, আসলে আরো কম)।

Pir-original sensorinside pir

পির মোশন সেন্সর সার্কিট একটি অতি সরল সার্কিট। গ্রাউন্ড পিন আর সিগনাল পিন (+৩.৩ ভোল্ট) ব্যবহার করে সহজেই একটা লেড (LED) জ্বালানো যায়। প্রথম চিত্রে সেটি দেখানো হয়েছে। আমরা যদি মিডিয়াম ভোল্টেজ ডিসি লোড (৫০ ভোল্ট পর্যন্ত) চালাতে চাই তাহলে একটি ট্রাঞ্জিষ্টারই যথেষ্ঠ আর যদি আরো হাই ভোল্ট বা/এবং এসি চালাতে চাই তাহলে ট্রাঞ্জিষ্টার ও রিলে ব্যবহার করা উচিত।

Pir-simple circuitpir-sensor-alarm-relay-oper

এই বার Sx, Tx ঘুরিয়ে ইচ্ছামত সেটিং ঠিক করে নাও।

মনে রাখবেঃ

# Sx ঘুরিয়ে সেন্সিভিটি বাড়ার সাথে সাথে সেন্সরের কভারিং ডিস্টেন্স কমে আসে।

# পির মডিওল ভেদে ৫ ভোল্ট থেকে ১৫ ভোল্ট পর্যন্ত সাপ্লাই দেয়া চলে। অবশ্যই তোমার মডেলের সাপ্লাই ভোল্টেজ অনলাইনে বা দোকান থেকে শিউর হয়ে নিবে।

# দোকানে গিয়ে পির মডিউল কিনবে, পির সেন্সর না। পির সেন্সর কিনলে অনেক কিছু এড করতে হবে ফলে বর্নিত মোতাবেক প্রজেক্ট করা যাবেনা।

# পির মডিউল উজ্জ্বল আলো (ডাইরেক্ট সুর্যালোক) মধ্যে স্থাপন করা যাবেনা নাইলে পির সেন্সরের চোখ ধাধিয়ে যেতে পারে। ছায়া যুক্ত স্থানে (অন্ধকারে কোন সমস্যা নেই) লাগানো সর্বোত্তম।

# পির মডিউল প্রথম সুইচ অন করার পর ১ মিনিট পর্যন্ত সময় নেয় আশে পাশের পরিবেশকে চিনতে। এই সময় ফলস ট্রিগারিং হতে পারে। তাই ১ মিনিট পর থেকে তা সঠিক ভাবে কাজ করবে।

অনেকসময় একটা পির সেন্সর পুরো এরিয়া কভার করতে পারেনা সেক্ষেত্রে একাধিক পির সেন্সর একত্র জুড়ে দেয়া যায় তবে প্রতিটার সিগনাল পিনে একটা ডায়োড লাগানো উচিত যাতে একটার কারেন্ট আরেকটায় প্রবেশ না করে। আর প্রতিটা পির সেন্সরের টাইমিং ও একই করা উচিত।

pir network

সিকিউরিটি লাইট (যেমন সিড়ির লাইট) ইত্যাদি দিনের বেলা প্রয়োজন পড়েনা। শুধু রাতে + লোকের উপস্থিতিতে জ্বালানো প্রয়োজন পড়ে। সেক্ষেত্র একটি ডার্ক সেন্সরের সাথে পির সেন্সর এড করে দেয়া যায়। যাতে শুধু রাতের বেলা পির যুক্ত সিকিউরি লাইট অন থাকে।

LDR+PIR

আপাতত এই প্রজেক্ট এখানেই শেষ। আশাকরি তোমরা সহজেই এটি বানাতে পারবে।

human detetion

বুজতে সমস্যা হলে ভিডিও লিংক :-  Youtube

ফেসবুক এ আমি :  S@G@R